কুবির ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের চড়া দাম; শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

কুবি প্রতিনিধি।।
দীর্ঘ আক্ষেপের অবসান ঘটিয়ে ২২ মাস বন্ধের পর খুলে দেয়া হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া। কিন্তু উচ্চ মূল্যে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনসহ কোনো নিয়ম নীতি না মেনেই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটেরিয়াটি। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও সমাধানের যেন কেউ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০০০ সদস্যদের জন্য রয়েছে একটি মাত্র ক্যাফেটেরিয়া। এ বিশাল পরিমাণ শিক্ষার্থীকে প্রতিবেলা খাবারের জন্য কোনো না কোনো ভাবে ক্যাফেটেরিয়ার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মূল্য তালিকার সাথে আশেপাশের হোটেল গুলোর মূল্য তালিকার খুব একটা পার্থক্য নেই। নিয়মিত মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় ক্যাফেটেরিয়া কর্তৃপক্ষ নিজের ইচ্ছেমতোই নির্ধারণ করছে খাবারের মূল্য তালিকা। এছাড়াও ক্যাফেটেরিয়ায় কোনো সাবমারসিবল পাম্প বা ফিল্টার না থাকায় ট্যাপের পানি পান করে নিয়মিত অসুস্থ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা। এমনকি শিক্ষক-অভিভাবকদের জন্য একটি নির্ধারিত বসার জায়গা থাকলেও তাতে নেই কোনো সাজসজ্জা কিংবা ভালো মানের ফার্ণিচার।

খাবারের উচ্চ মূল্য ও নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের বিষয়ে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক মান্নু মজুমদার বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে মাছ-মাংস, সবজিসহ সকল কিছুই বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। তারপরও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে মূল্য কমাবেন বলে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন তিনি।

ক্যাফেটেরিয়ায় হঠাৎ করে মূল্য বৃদ্ধি ও সার্বিক বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহিনুল ইসলাম গালিব বলেন, “উচ্চমূল্যে নিম্নমানের খাবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়। সঙ্গে আছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ফলে প্রতিনিয়ত অসুস্থ হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া সুপেয় পানির অভাব আমাদের এখানে একটি অন্যতম সমস্যা। দ্রুত এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি ”

শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়ে ছাত্রপরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাঃ হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি ফিজিক্যাল ফিট থাকাটা খুবই দরকারি। যার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এবং সুপেয় পানি পান অন্যতম। ক্যাফেটেরিয়া পরিচালককে আজকেও আমি এবিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য বলেছি এবং ভিসি স্যারের সাথেও এবিষয়ে আমি কথা বলবো।

খাবারের মূল্য তালিকা এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও সুপেয় পানি নিশ্চিতের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমরা খুব শিঘ্রই ক্যাফেটেরিয়ায় মূল্য তালিকা সহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো মনিটরিংএর জন্য একটা কমিটি করে দিবো অথবা আগের কমিটিকে সচল করে দিবো। আর সাবমারসিবল পাম্প বা ফিল্টার যেহেতু আর্থিক বিষয়ের সাথে জড়িত তাই উপাচার্য মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, আমিতো মাত্র দুদিন হলো আসছি। ক্যাফেটেরিয়ার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে যারা আছেন তাদের সাথে আলোচনা করে একটা পদক্ষেপ নিবো।

প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর মধ্যে তিন দফা বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটেরিয়াটি। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে নতুন আঙ্গিকে ক্যাফেটেরিয়া খোলার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পুরণে ব্যর্থ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  

You cannot copy content of this page